- শীরক কী? আমি কীভাবে বুঝব আমি শীরক করতেছি কিনা?
Share
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people’s questions, and connect with other people.
Login to our social questions & Answers Engine to ask questions answer people’s questions & connect with other people.
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
কি কি কাজ করলে শিরক হয়? শিরক সম্পর্কে জানলেন না…তো আপনার এ জীবনই বৃথা!! নামাজ, রোজা,হজ্জ,দানের মতো বড় বড় ইবাদতকে এটা ধ্বংস করে দেয়। আর শেষ ফলাফল হলো স্থায়ী ভাবে জাহান্নামে অবস্থান।
শরিরে যে কোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শিরক।
®[মুসনাদে আহমদ: ১৭৪৫৮, সহিহ হাদিস:৪৯২]
.
আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক।
®[আবু দাউদ:৩২৩৬(ইফা)]
.
কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষন বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক।
®[বুখারি :৫৩৪৬, আবু দাউদ:৩৯১০]
.
মাজারে ও কোন পির-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদা দেয়া শিরক।
®[সুর জীন: ২০, মুসলিম:১০৭৭,
আবু দাউদ, মুত্তাফাকুন আলাই]
.
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পির-আওলিয়া কিংবা
মাজারের নামে নামে মানত করা শিরক। তবে মানত না করাই উত্তম।
®[সহিহ বুখারি: অধ্যায় : তাকদির]
.
রোগ ব্যাধি বা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে শরিরে
পিতলের বালা, শামুক, ঝিনুকের মালা, সুতা, কিংবা যেকোন প্রকারের বস্তু লটকানো শিরক।
®[তির্মিযি, আবু দাউদ ও হাকেম]
.
সকালে বেচাকেনা না করে কোন কাষ্টমারকে বাকি দিলে কিংবা সন্ধ্যার সময় কাউকে বাকি দিলে ব্যাবসায় অমঙ্গল হয় এই ধারনা করা শিরক!।
®(আবু দাউদঃ৩৯১০)
.
সফলতা কিংবা মংগল লাভের জন্য এবং অমংগল থেকে রক্ষা পেতে যেকোন প্রকার আংটি ব্যবহার করা শিরক।
®[সুরা আনাম:১৭, ইউনুস :১০৭]
.
যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক
যেমন: পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি।
®[সুরা বাকারাহ:২৩৮, আহকাফ:৫, ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮, আবু দাউদ:৪০৩৩]
.
আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদাত করা শিরক।
®[সুরা আনাম:১৬২, বাইয়িনাহঃ ৫, কাহফ:১১০,ইমরান:৬৪, ইবনে মাজাহ হা নং৫২০৪]
.
আল্লাহ ব্যাতিত কোন গণক বা অন্য কেউ গায়েব জানে এই কথা বিশ্বাস করা শিরক
®[সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৬, আনাম:৫৯]
.
আল্লাহর ছাড়া কোন পির-আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দুয়া করা বা কোন কিছু চাওয়া শিরক।
®[সুরা ফাতিহা:৪, আশ শোআরা:২১৩, গাফির:৬০, তির্মিযি]
.
“আপনি চাইলে এবং আল্লাহ চাইলে এই কাজটি হবে” এই কথা বলা শিরক
® (নাসাঈ শরিফ) এখানে শুধু অাল্লাহ্ চাইলে হবে, বলা যেতে পারে।
.
এইরকম আরো অসংখ্য শিরক সমাজে বিদ্যামান।
.
আল্লাহ বলেন, অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে শিরকও করে।
®(সুরা ইউসুফঃ ১০৬)
.
মনে রাখবেন,,
শিরক এমন একটি গুনাহ যা করলে ঈমান এবং পূর্বের সমস্ত আমল সম্পুর্ন নষ্ট হয়ে যায়। কিয়ামতের দিন আল্লাহ যেকোন গুনাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কশ্চিনকালে ও ক্ষমা করবেন না।
আল্লাহ বলেন,,
নিসন্দেহে আল্লাহ ইচ্ছা করলে যেকোন গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।
®(সুরা নিসা :৪৮,১১৬)
..
নিশ্চয় যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং জাহান্নামকে অবধারিত করে দেন।
®(সুরা মায়িদাহ:৭২)
.
রাসুল্লাহ (সা) বলেছেন,,
“আমার সামনে জিব্রাঈল আবির্ভূত হলেন। তিনি বললেন, আপনি আপনার উম্মতদের সুসংবাদ দিন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে? তিনি বললেন: যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে।
®[সহিহ বুখারি :১২৩৭,মুসলিম:৯৪]
.
শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধ্বংসত্মাক বিষয়। শত পাপ করলে ও কিয়ামতের দিন তা ক্ষমার সম্ভবনা আছে কিন্তু শিরকের পাপ ক্ষমার কোন সম্ভবনাই নেই এবং তা নিসন্দেহে জাহান্নামে নিয়ে যাবে।
ঈমান ভঙ্গের দশটি কারণ-
——————————
আমরা ওযু ভঙ্গের কারণ জানি, নামায ভঙ্গের কারণ জানি কিন্তু ঈমান ভঙ্গের কারণ জানি কি??
এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় দুই মিনিট সময় ব্যয় করে একটু সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নিতে পারেন..! নিচে বিষয়গুলো সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো…!
একঃ আস শিরক
আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদতে শরীক করা। এ ব্যাপারে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ আল্লাহ্ বলেছেন:
“নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর সাথে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না।ইহা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেহ আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহা পাপ করে।”(সূরা নিসা ৪: আয়াত ৪৮)
“…….কেহ আল্লাহর সাথে শরীক করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যেই হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদা ৫: আয়াত ৭২)
কেউ আল্লাহর সাথে যে বিভিন্ন প্রকার শরীক করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে অলিহাহ, আরবাব, আনদাদ ও তাগুত। বর্তমান কালের কয়েকটি বড় বড় শিরক সমূহের মধ্যে রয়েছে মাজার ও কবর পূজা, পীর ও আল্লাহর অলিরা গায়েব জানেন, অসুস্থকে সুস্থ করতে পারেন, বাচ্চা দিতে পারেন, বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারেন কিংবা আমাদের খবর জানেন ইত্যাদি ধারণা পোষণ করা।
আল্লাহ্ একমাত্র আইন ও বিধান দাতা। কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন সমাজ, রাষ্ট্র, শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থা, শাস্তি, অর্থনীতি কিভাবে চালাতে হবে এবং এ সমস্ত ব্যাপারে আল্লাহর দেয়া বিধানই প্রত্যেক মুসলিমের একমাত্র সংবিধান। যদি কেউ আল্লাহর দেয়া সংবিধানের উপর নিজেরা আইন তৈরী করে তবে তারা তাগুত(আল্লাহদ্রোহী, সীমালংঘনকারী)-তে পরিণত হবে। যারা তাগুতের তৈরী সংবিধানকে মানবে, তারা মানার বিষয়ে আল্লাহর সাথে শিরক্ করে মুশরিকে পরিণত হবে। এমনিভাবে আল্লাহর দেয়া শরীয়া আইন বাদ দিয়ে যে সমস্ত বিচারক মানুষের তৈরী করা আইন দিয়ে বিচার ফয়সালা করে তারাও তাগুত।এবং যে সকল লোক তাদের কাছে নিজের ইচ্ছার বিচার ফয়সালা নিয়ে যাবে তারাও শিরকের গুনাহতে লিপ্ত হয়ে ইসলাম থেকে বাদ পড়ে যাবে।
দুই:মধ্যস্থতা ধরা
যে ব্যক্তি তার নিজের এবং আল্লাহর মধ্যে মধ্যস্থতা ও যোগাযোগের মাধ্যম বানায় এবং তাদের কাছে তার মনোস্কামনা পূরণের(শাফায়া) জন্য আবেদন নিবেদন করে এবং তাদের উপর নির্ভর করে, সে কাফির (অবিশ্বাসী) হয়ে যায়। ইহাই অতীত ও বর্তমানের আলেমদের ইজমা।
“তারা আল্লাহকে ব্যতিত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না,উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, ‘এইগুলি আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিবে যা তিনি জানেন না?তিনি মহান, পবিত্র’ এবং তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি উর্দ্ধে।”(সূরা ইউনুস ১০: আয়াত ১৮)
“জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।” (সূরা যুমার ৩৯:আয়াত ৩)
এর একটি স্পষ্ট উদাহরণ হবে যদি কোন ব্যক্তি মৃত বা জীবিত পীর(ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব) বা দরবেশের কাছে সন্তান দেয়ার বা মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য প্রার্থনা করে; এছাড়া তাবীজ দিতে বলে আর বিশ্বাস স্থাপন করে পীরবাবার তাবীজে সে সুস্থ হবে অথবা মনের কামনা পূরণ হবে। এসকল কাজ দ্বারা আল্লাহ তা’য়ালা রুবুবিয়াতের সাথে পীরবাবা বা বুজুর্গকে শরীক করা হয়। ইহা সুস্পষ্ট শিরক্ যা কিনা একজন মুসলিমকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়।
তিন: যে ব্যক্তি বহু্ইশ্বরবাদকে প্রত্যখান না করে বা বহুইশ্বরবাদী(মুশরীক) কাফির কিনা এমন সন্দেহ পোষণ করে সে কাফির হয়ে যায়। উদাহরণ স্বরূপ যদি কোন ব্যক্তি বলে যে, সে নিশ্চিত নয় একজন খৃষ্টান কাফির কিনা, তাহলে সে নিজেই কাফির হয়ে যায়। কারণ সে ঈসা(আ)-কে আল্লাহ হিসেবে গ্রহণকারী খৃষ্টানদের প্রত্যাখান করে নি।
চার: যে ব্যক্তি মহানবী(সা) এর পরিপূর্ণতা ও দিক নির্দেশনা বা ফয়সালায় অবিশ্বাস করে সে কাফির। এর কারণ হচ্ছে আল্লাহর রাসূল(সা) ও তার ফয়সালা হচ্ছে সীরাতুল মুসতাক্কিমের উপর। আর যারা তাগুতের কাছে যাওয়া বেশি পছন্দ করে তারা সত্য সঠিক পথ হতে বহু দূরে। এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
“কারও নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যে দিকে সে ফিরিয়া যায় সে দিকেই তাকে ফিরাইয়া দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করবেন না; ইহা ব্যতিত সব কিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, এবং কেহ আল্লাহর শরীক করলে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়।” (সূরা নিসা ৪: আয়াত ১১৫-১১৬)
এই আয়াত দ্বারা পরিষ্কার রুপে প্রমানিত হয় যে রাসূলের প্রদর্শিত পথের বিরোধীতা করা এবং মু’মিনের পথ ছেড়ে অন্য কোন পথ গ্রহণ করা শিরক। এর শাস্তি হচ্ছে নিকৃষ্ট স্থান জাহান্নাম। যদি কোন বিষয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা দ্বারা প্রমাণিত হয়, তাহলে তা নিয়ে কানাঘুষা করা এবং তা ছেড়ে নিজের মনগড়া পথের বা অন্য কারোর অন্ধ অনুকরণে অন্য পথের আশ্রয় নেয়া সুস্পষ্ট শিরক। আল্লাহ শিরককে কখনই ক্ষমা করবেন না।
পাঁচ: যে ব্যক্তি নবী মুহাম্মদ(সা) যা কিছু নিয়ে এসেছেন তাতে অসন্তুষ্ট হয় যদিও সে এ অনুযায়ী কাজ করে, সে কাফির হয়ে যায়। যেমন এক ব্যক্তি যে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে অথচ সে এগুলো করা অপছন্দ করে অথবা এমন এক মহিলা যে হিজাব পরে অথচ সে তা পরা অপছন্দ করে।
মহান আল্লাহ বলেন-
“আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে,‘আমরা আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমান এনেছি’, কিন্তু তারা মু’মিন নয়।” (সূরা বাকারা ২; আয়াত ৮)
“কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার(রাসূলের) উপর অর্পণ না করে; অত:পর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্ত:করণে মেনে য়ে।” (সূরা নিসা ৪: আয়াত ৬৫)
ছয়: যে ব্যক্তি দ্বীনের আওতার কোন কিছুর ব্যাপারে উপহাস করে বা কৌতুক করে অথবা ইসলামের কোন পুরষ্কার বা শাস্তির ব্যাপারে ব্যাঙ্গ করে সে কাফির হয়ে যায়। এর প্রমাণ হচ্ছে—
“এবং তুমি তাদেরকে প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমারা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বল, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর নিদর্শন ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ ‘তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করিও না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ।….” (সূরা তওবা ৯ : আয়াত ৬৫-৬৬)
সাত: আস সিহর বা জাদু
সকল প্রকার যাদু নিষদ্ধ, কেউ এতে অংশগ্রহণ করুক, সময় ব্যয় করুক বা চর্চার প্রতি সহানুভূতিশীল হোক না কেন। যে ব্যক্তি জাদু চর্চা করে বা জাদুতে খুশী হয়, সে কাফির হয়ে যায়। কারণ আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন:
“…সুলায়মান কুফরী করে নাই কিন্তু শয়তানরাই কুফরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত….।”(সূরা বাকারা ২ : আয়াত ১০২)
আট: যে ব্যক্তি মুশরিককে(বহু ঈশ্বরবাদী কাফের-ইহুদী,খ্রিষ্টান প্রভৃতি) সাহায্য সমর্থন করে এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাকে সহয়তা করে সে কাফির হয়ে যায় কারণ তার কাছে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে এমন একজন মুসলিমের তুলনায় আল্লাহর শত্রু বেশী প্রিয়।ইহার প্রমাণ হচ্ছে মহান আল্লাহ তা’য়ালার এই কথা:
“হে মু’মিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি ঈমানের মুকাবিলায় কুফরীকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে তাদেরকে অন্তরঙ্গরুপে গ্রহণ করে না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে অন্তরঙ্গরুপে গ্রহণ করে, তারাই যালিম।” (সূরা তওবা ৯:আয়াত ২৩)
“হে মু’মিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করো না, তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেহ তাদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।” (সূরা মায়িদা ৫ : আয়াত ৫১)
নয়: যদি কোন ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, সে শারিয়ার মধ্যে (আল্লাহর আইন) বিভিন্ন জিনিস যোগ করা বা কতিপয় বিষয় বাদ দেওয়ার মাধ্যমে ইসলামের উন্নতি সাধন করতে পারব তাহলে সে কাফির হয়ে যায়।
ইহার কারণ হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালার পরিপূর্ণভাবে সকল মানুষের জন্য তার নবী মুহাম্মদ(সা)-এর কাছে ইসলামের বাণী পাঠিয়েছেন এবং যদি কেউ এটা অস্বীকার করে তাহলে সে কুরআনের এই আয়াতের বিরুদ্ধে যায়:
“…আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।…”(সূরা মায়িদা ৫: আয়াত ৩)
দশ: মুহাম্মদ(সা)-এর প্রতি অবতীর্ণ বাণী শিক্ষা না করা অথবা সে অনুযায়ী কাজ না করার মাধ্যমে কেউ আল্লাহর বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে সে ইসলামের গন্ডির বাহিরে চলে যায়। আল কুরানে এর প্রমাণ হচ্ছে-
“যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।” (সূরা সাজদা ৩২:আয়াত ২২)
মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ আরো বলেছেন:
“বল, ‘তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ বল, ‘আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত হও।’ যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রাখ, আল্লাহ তো কাফিরদেরকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আল ইমরান : ৩১-৩২)
এইগুলোই দশটি বিষয় যা কোন ব্যক্তির ইসলামকে অকার্যকর করতে পারে এবং যদি সে তার ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত না হয় এবং সে মৃত্যু বরণ করার আগে আবার ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে সে একজন মুশরিক (পৌত্তলিক) বা একজন কাফিরের মৃত্যুবরণ করে, আর তার গন্তব্যস্থল হয় অনন্ত কালের জন্য দোজখের আগুন এবং কোনদিনও জাহান্নামের আগুন থেকে বের করা হবে না।
ঈমানের সাথে সম্পর্কিত অতি প্রয়োজনীয় উপরে উল্লেখিত বিষায়াদির প্রতিটি মানুষের নিজে জানা, উপলদ্ধি করা এবং সেই সাথে অন্যকেও জানিয়ে দেয়া আমাদের প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব।
আসুন আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হই এবং এই বক্তব্যটি অন্যর কাছে পৌঁছে দেই।
আল্লাহ সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক।
®জাজাকাল্লাহ খাইরন [আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক]
শিরক হচ্ছে সকল পাপের চাইতে বড় পাপ। যা আল্লাহ তা’আলা যা কক্ষনো ক্ষমা করবেন না।
যদি কোন ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে মারা যায় তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকতে হবে। শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, যে শিরক মানুষের সব আমাল নস্ট করে দেয়, মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শিরকের অপরাধ ক্ষমা করবেন না। আর ইহা ব্যতীত যাকে ইচ্ছা (তার অন্যান্য অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আন-নিসা ৪: ৪৮)
হাদিসের বর্ণিত আছে “যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে কিছু শরিক না করে মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে কিছু শরিক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম-৯৩)
কুরআনে আল্লাহ বলেন,
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
“যখন লোকমান তাঁর পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বললেনঃ হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে শিরক করনা; কেননা শিরক সবচেয়ে বড় অন্যায় ” (সূরা লোকমান ৩১:১৩)।
মহিয়ান গরিয়ান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ۖ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
“নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ -৫:৭২)
আল্লাহ তা’আলা তার প্রিয় নাবীকে সাবধান করে বলেন,
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
“আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন। ”(সূরা যুমার-৩৯:৬৫)
অতএব এ আয়াৎ থেকে আমরা জানতে পারি নাবী (সা) যদি শিরক করতো তাহলে তার সমস্ত আমল ধ্বংস হয়ে যেত অতএব আমরা উম্মতরা কোথায় আছি। সুতরাং শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান। হে আল্লাহ, হে বিশ্বজগতের পালনকর্তা তোমার কাছে আমরা যাবতীয শিরক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমীন। ছুম্মা আমীন।
একনজরে আমাদের সমাজে প্রচলিত শিরক
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল…
1. আহবানের শিরকঃ আহ্বানের শিরক বলতে মানুষের ক্ষমতার বাইরে এমন কোন পার্থিব লাভের আশায় অথবা কোন পার্থিব ক্ষতি হতে রক্ষা পাবার উদ্দেশে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে আহবান করা বুঝায়। (সূরা জিন ৭২:১৮, রাদ-১৩:১৪, মারিয়াম-১৯:৪৮)
2. ফরিয়াদের শিরকঃ ফরিয়াদের শিরক বলতে নিতান্ত অসহায় অবস্থায় আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকাকে বুঝায়। রোগ নিরাময়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকা। (সূরা আনফাল-৮:৯, আনকাবুত-২৯:৬৫)
3. আশ্রয়ের শিরক- কোন অনিষ্টকর বস্তু বা ব্যক্তি হতে বাঁচার জন্য আলাহ ব্যতিত অন্য কারো কাছে আশ্রয় নেয়া বা সরনাপন্ন হওয়া। (সূরা ফুসসিলাত/ হা মিম আসসাজদাহ-৪১:৩৬, সূরা মুমিনুন-২৩:৯৭-৯৮, সূরা ফালাক ১১৩:-১-৫, সূরা নাস ১১৪:১-৬)
4. আশা বা বাসনার শিরক- মানুষের অসাধ্য কোন বস্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কামনা করা। যেমন, কোন পিরের কাছে সন্তান কামনা করা। (সূরা আশ-শুআরা-৪২:৪৯,৫১)
5. নামাজের শিরক- রুকু, সিজদাহ, সওয়াবের আশায় কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সামনে বিনম্রভাবে দাঁড়ানো বা নামাজের শিরক বলতে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতগুলো ব্যয় করাকে বুঝান হয়। (সূরা হাজ্জ-২২:৭৭, আনআম-৬:১৬২-১৬৩)
6. তাওয়াফের শিরক- কাবা ঘর ব্যতিত অন্য কোন বস্তুর তাওয়াফ করা।(হাজ্জ-২২:২৯, বাকারাহ-২: ১২৫)
7. তাওবার শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে তাওবা করা। (সূরা নুর-২৪:৩১, আল ইমরান-৩:১৩৫)
8. জবাইয়ের শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নৈকট্য লাভের জন্য পশু জবাই করা। চাই তা আল্লাহর নামেই করা হোক বা অন্য কারো নামে বা নাবী বা জিনের নামে। (সূরা আনআম- ৬:১২১, ১৬২-১৬৩)
9. মানতের শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর জন্য মানত করা। (সূরা-হাজ্জ-২২:২৯, বাকারাহ-২:২৭০, আনআম-৬:১৩৬)
10. আনুগত্যের শিরক- বিনা ভাবনায় শরিয়তের গ্রহণযোগ্য কোন প্রমান ছাড়াই হালাল হারাম জায়েজ নাজায়েজের ব্যপারে আলেম বুজুর্গ বা উপরস্থ কারো সিদ্ধান্ত অন্ধভাবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়া।(তাওবা-৯:৩১, আনআম-৬:১২১,আরাফ-৭:৩,)বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্ধভাবে চার মাঝহাবের চার জন মহামতি ইমামের অন্ধ অনুসরণ করাও শিরক। উপরন্তু এই চার জন মহান ব্যক্তি কখনই নিজেকে অন্ধভাবে অনুসরন করতে বলেনি। যদি কোন ব্যক্তি মনে করে বর্তমান যুগে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা অচল এবং গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র,পীরতন্ত্র,ধরমনিরপেক্ষ মতবাদ ইত্যাদিই হল আধুনিক পদ্ধতি তাহলে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। খ্রিস্টানরা তাদের আলিমদের উপাসনা করত না তবে তারা হালাল হারামের ব্যপারে বিনা প্রমানে তাদের আলিমদের সিদ্ধান্ত মেনে নিত। আর এটিই হচ্ছে শিরক। (তিরমিজি-অধ্যায় ৪৭ হা: নং ৩০৯৫)
11. ভালবাসার শিরক- দুনিয়ার কাউকে এমন ভাবে ভালবাসা যাতে তাঁর আদেশ নিষেধ কে আল্লাহ তাআলার আদেশ নিষেধের উপর প্রাধান্য দেয়া অথবা সমপর্যায়ের মনে করা। প্রকৃতিগত ভালবাসা (খাবার), স্নেহ জাতীয় ভালবাসা (সন্তানের জন্য পিতার), আসক্তিগত ভালবাসা (স্বামীর জন্য স্ত্রীর) ইত্যাদির কোনটাকেই আল্লাহ তাআলার ভালবাসার উপর স্থান দেয়া যাবে না। (বাকারাহ-২:১৬৫, তাওবা-৯:২৪)
12. ভয়ের শিরক- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে প্রকাশ্যভাবে দুনিয়া বা আখিরাত সংক্রান্ত যে কোন ক্ষতি সংঘটন করতে পারে বলে অন্ধ বিশ্বাস করে তাকে ভয় পাওয়াকে বুঝানো হয়। মানুষ, মূর্তি, জিন ইত্যাদির অনিষ্টতা থেকে ভয় পাওয়া শিরক। প্রভাবশালি শাসকের ভয়ে ভাল কাজ বা জিহাদ হতে দূরে থাকা ছোট শিরক। তবে শত্রুর ভয়, বাঘের ভয় ইত্যাদি স্বাভাবিক ভয় শিরকের অন্তরভুক্ত নয়। (সূরা আনাআম- ৬:৮০-৮১, হুদ-১১:৫৪-৫৫, তাওবাহ-৯:১৩)
13. ভরসার শিরক- মানুষের অসাধ্য ব্যপারসমুহের ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রতি ভরসা করা। কারো সমস্যা দূরীকরণ, চাকরি লাভ, রোগমুক্তি ইত্যাদি ব্যপারে আল্লাহর উপরেই ভরসা রাখতে হবে। দান, সাদাকার ব্যপারে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তির উপর ভরসা ছোট শিরক। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁর কর্মচারীদের উপর মালামাল উৎপাদন বা কোন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ভরসা করতে পারে। তবে সম্পূর্ণরূপে ভরসা করা শরিয়াতে জায়েজ নয়।(মায়িদাহ-৫:২৩, ইউনুস-১০:৮৪)
14. সুপারিশের শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে পরকালের মুক্তির জন্য সুপারিশ কামনা করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (জুমার-৩৯:৪৪, আনাআম-৬: ৫১, বাকারাহ-২:২৫৫)
15. হিদায়াতের শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ কাউকে হিদায়াত করতে পারে এমন বিশ্বাস করা অথবা কারো নিকট হিদায়াত কামনা করা। (বাকারাহ-২:২৭২, ইউসুফ-১০:১০৩)
16. সাহায্য প্রার্থনার শিরক- মানুষের সাধের বাইরে কোন কাজ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট কামনা করা। (ফাতিহা-১:৫)
17. কবরের শিরক- কবরে শায়িত কারো জন্য ইবাদাত ব্যয় করা। অর্থাৎ সেখানে সালাত আদায় করা, সিজদাহ করা শিরক (মুসলিম-৯৮৯) তাঁর নিকট কিছু চাওয়া। তাঁর (ওসীলায়) মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে কিছু চাওয়া। সেখানে মসজিদ নির্মাণসহ আরও অসংখ্য শিরক বিদ্যমান। (নুহ-৭১:২৩, ) (বুখারি- ৪২৭,২৮)
18. আল্লাহর অবস্থান সম্পর্কিত শিরক- আল্লাহ মুমিনের অন্তরে বিরাজমান মনে করা। আল্লাহ সবার অন্তরে বিররাজমান মনে করা। আল্লাহ সকল বস্তুর মাঝে লুকায়িত মনে করা। আল্লাহ সম্পর্কে সহিহ আকিদা হল, তিনি আরশের উপর অবস্থান করছেন। তাঁর আকার আছে কিন্তু তিনি তাঁর মত।তার সদৃশ (মত)কেউ নেই। (মূলক- ৬৭:১৬-১৭, , ইমরান- ৩:৫৫, আরাফ- ৭:৫৪)
19. দেখা ও শোনার শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মানুষ হোক নাবি বা রসুল সব শুনতে বা দেখতে পান এমন মনে করা শিরক। (সূরা ইউনুস- ১০:৬১, তাহা-২০:৪৬)
20. কিয়ামতের শিরক- কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কোন নাবি, রসুল, পীর, অলি, ইত্যাদি মানুষরা অন্যান্য মানুষদের আজাব হতে বাচাতে পারবে এটা মনে করা শিরক। এছাড়া অন্য কেউ মানুষকে আল্লাহর আজাব হতে কাউকে ক্ষমা করাতে পারবে এমনটা মনে করাও শিরক। (সূরা তাহরিম- ৬৬:১০, শুআরা- ২৬:২১৪, তাওবাহ- ৯:৮০)
21. গায়েব জানার শিরক- আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মানুষ হোক নাবি, রসুল, বুজুর্গ গায়েব জানেন এমনটা বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা নামল- ২৭:৬৫, সূরা আনআম- ৬:৫০-৫৯)
22. মানুষের অন্তরের কথা- আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ মানুষের মনের কথা জানেন না। এর বিপরীতে বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা মুলক- ৬৭:১৩,১৪)
23. আল্লাহ ছাড়া সন্তান সন্ততি কেউ দিতে পারে- আল্লাহ যাকে চান সন্তান দিতে পারেন। অন্য কারো এই ক্ষমতা নেই। (সূরা শুরা- ৪২:৪৯-৫০)
24. আল্লাহ ছাড়া সুস্থতা- একমাত্র আল্লাহ তাআলাই মানুষকে সুস্থতা দান করতে পারেন, অন্য কেউ নয়। (সূরা শুআরা- ২৬:৭৮-৮২)
25. কাজ করার শিরক- আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ ইচ্ছা করলেই কোন ভাল কাজ করতে পারবে বা কোন খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারবে এমন মনে করা শিরক। (সূরা হুদ-১১: ৮৮)
26. ক্ষতির শিরক- আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ কারো ক্ষতি করতে পারে এমনটা মনে করা শিরক। (সূরা ফাতহ- ৪৮:১১)
27. জীবন মৃত্যু- আল্লাহ ছাড়া কেউ কাউকে বাঁচাতে পারে বা মারতে পারে এমন মনে করা শিরক। (সূরা মুমিন- ৬৮)
28. আল্লাহ ছাড়া সবাই মৃত- যদি কেউ মনে করেন আল্লাহ ছাড়াও অন্য কোন নাবি,রসুল,গাউস,কুতুব সর্বদা জীবিত রয়েছেন তাহলে সে শিরক করছে। (সূরা রাহমান- ৫৫:২৬-২৭,সূরা ইমরান- ৩:১৮৫,১৪৪, সূরা জুমার- ৩৯:৩০)
29. আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ব পরিচালনা করেন- কোন নাবি, রসূল, গাউস, কুতুব, ওলি বিশ্ব পরিচালনায় অংশ নেন, একথা মনে করা শিরক। আল্লাহ তাআলা সময়কেও নিয়ন্ত্রন করেন। তাই সময় বা যুগকে গালি দেয়া গর্হিত কাজ। (সূরা রাদ- ১৩:২,সূরা ইউনুস- ১০:৩১, সূরা সাজদাহ-৩২:৫)
30. অন্তরের পরিবর্তন- একমাত্র আল্লাহ তাআলাই কারো অন্তরের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। এর ব্যতিক্রমে বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা আনফাল- ৮:২৪) (তিরমিজি- ৩৫২২)
31. যাদু-টোনা, বাণ মারা।
সুতরাং, শিরক থেকে বেঁচে থাকার জন্য সবসময় আল্লাহ তা‘আলার নিকটে প্রাণখুলে দো‘আ করা ও সাহায্য প্রার্থনা করা কর্তব্য। রসূল (সা) শিরক হ’তে বাঁচার জন্য আমাদেরকে দো‘আ শিখিয়েছেন:
اَللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوْذُبِكَ أَنْ نُشْرِكَ شَيْئًا نَعْلَمُهُ وَنَسْتَغْفِرُكَ لَمَا لاَ نَعْلَمُ
‘আল্লাহুম্মা ইন্না না‘ঊযুবিকা আন নুশরিকা শাইআন না‘লামুহ, ওয়া নাসতাগফিরুকা লিমা লা না‘লামুহ।
“হে আল্লাহ্, জেনে বুঝে শিরক করা থেকে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আমাদের অজ্ঞাত শিরক থেকে আপনার নিকটে ক্ষমা চাচ্ছি।” ( সহীহ-আদাবুল-মুফরাদ-৭১৬)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ছোট-বড় সকল প্রকার শিরক হ’তে রক্ষা করুন, আমীন!